রাজধানীর প্রায় সব এলাকার বাসা-বাড়ী এবং বেশিরভাগ আবাসিক হোটেলেই রয়েছে রমরমা দেহব্যবসা। আর এসব ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে বিভিন্ন শ্রেনীর দালাল চক্র। বেশির ভাগ হোটেলেরই খদ্দের বা কাস্টমার বা গেস্ট জোগাড় করা হয় রাস্তা থেকে। দালালরা টার্গেট করে পথচারীকে তারা মামা বলে ডাক দেয়। কাছে এলেই ধরিয়ে দেয় ভিজিটিং কার্ড। সম্মত দেখলেই বলে, মামা যেমন বয়সের দরকার সব ব্যবস্থা আছে। যৌনকর্মীরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তাদের পরিচিত মানুষের মাধ্যমে বাসায় (গেষ্ট) খদ্দের পেয়ে থাকেন। তবে ভিআইপি এলাকায় যৌন ব্যবসা পরিচালিত হয়বিশেষ গোপনীয় কায়দায়।
সেখানে যাতায়াত করে বিশেষ ধরনের (গেষ্ট) খদ্দের। কাকরাইলের এক ভাসমান যৌনকর্মী জানায়, ঢাকা শহরের দুএকটা স্থান ছাড়া সব জায়গাতেই এ ব্যবসা চলছে। মোবাইল ফোন ও ভিজিটিং কার্ডের মাধ্যমে এ ব্যবসার গতি বৃদ্ধি পেয়েছে।
সুত্রে জানা গেছে, হাতে একটি কার্ড পড়েছিল। তিনি কল করলে একজন পুরুষ রিসিভ করে।বিনয়ের সাথে জানায়, আপনার ফোনের অপেক্ষায়আছেন ঢাকার বিভিন্ন কলেজ, ইউনিভারসিটির ছাত্রী ও মধ্য বয়সের সুন্দরী তরুণীরা। বলুন কি সেবা করতে পারি স্যার? তার মতে, আজকাল সংসারে অশান্তি, স্বামী বিদেশে বা স্বামীর কর্মস্থল ঢাকার বাইরে-এ ধরনের অনেক মহিলা হোম সার্ভিসে যোগ দিয়েছেন।
শহরের বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা জড়িয়ে পড়ছে এই ঘৃনিত পেশায়। আর ছাত্রদের একটি গ্রুপ জড়িয়ে পড়ছে চাহিদামত খদ্দেরের খোঁজে আর খদ্দেরের সুবিধাজনক স্থানে পতিতাবৃত্তিতে জড়িত ঐসব ছাত্রীদের পৌছে দিতে।
শহরের পাঁচ তারকা হোটেলেগুলোতে মনোরঞ্জনের কাজেও ব্যস্ত থাকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা। গুলশান, নিকেতন, ধানমণ্ডি, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, বনশ্রী, উত্তরাসহ অভিজাত এলাকাগুলোর এইরকম বেশকিছু ফ্ল্যাট বাড়ির সন্ধান পাওয়া গেছে।
আইন প্রয়োগকারী সংস্থার যোগসাজস ও তাদের রহস্যজনক নীরবতার কারনে রাজধানী ঢাকার ৪৯টি থানার প্রায় পৌনে ১শ স্পটে ৪ শতাধিক হোটেল ও ২ সহস্রাধিক বাসা-বাড়ী ও ফ্ল্যাটে চলছে জমজমাট দেহ ব্যবসা। আর এর সাথে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ছে বিভিন্ন স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরাও। আর এদের খদ্দের হচ্ছে চাকুরে, পেশাজীবি, ছাত্র সহ সব শ্রেনীর পুরুষ।
বারিধারা বনানী ও গুলশান এলাকার দেড় শতাধিক গেষ্ট হাউজে রাতের বেলায় চলে মদ জুয়া ও দেহ ব্যবসা। কাজ হাসিলের জন্য এখানে আয়োজন করা হয় ওম্মা ওম্মা নাইট, থার্সডে নাইট ও ককটেল পার্টি। এসব পার্টিতে দেশী-বিদেশী কলগার্লরা অংশ নেয়। এছাড়া ৪ শতাধিক হোটেলের পাশাপাশি ২ সহস্রাধিক রেস্তরা, বিউটি পার্লার, ম্যাসেজ পার্লার, ক্লাব, বার, রেষ্ট হাউজ, ফ্ল্যাট ও বাসাবাড়ীতে চলছে দেহ ব্যবসা। অনুসন্ধানে জানা যায়, নগরীর ৮৫ ভাগ আবাসিক হোটেলে প্রতিদিন প্রায় ৫ হাজার নারী গণিকাবৃত্তিতে নিয়োজিত।
মিনি পতিতালয় গুলোতে দেহ ব্যবসার পাশাপাশি মাদকদ্রব্যের ব্যবহারও চলছে ব্যাপক ভাবে। হোটেলের আসরে বাংলা মদ থেকে শুরু করে দামী গ্রীন লেবেল, হুইস্কি রয়াল সেলুট ও জীন ভোদকাসহ সবই থাকে। সাধারণ মানুষের চোখে ফাঁকি দিতে হোটেল নাইট এ্যাংগেল থেকে কোক, পেপসী ও আরসি কোলার খালি বোতলে মদ কিনে নিয়ে যায় খদ্দেররা।
এক সমীক্ষায় দেখা গেছে প্রায় তিন হাজার বাসাবাড়ি, হোটেল রেস্তোরা ক্লাবে চলছে এখন গণিকালয়! এ যেনো এক পতিতাপুরী!