সাতক্ষীরা আবাসিকে রমরমা দেহ ব্যবসা

সাতক্ষীরা আবাসিকে রমরমা দেহ ব্যবসা

সাতক্ষীরা আবাসিকে রমরমা দেহ ব্যবসা

সাতক্ষীরা আবাসিক হোটেল নামটি শহরের একটি অতি পরিচিত নাম হলেও প্রতিদিন রমরমা দেহ ব্যবসা চলছে। জানা যায়, সাতক্ষীরার বাস টার্মিনাল সংলগ্ন সাতক্ষীরা আবাসিক হোটেলের সাইনবোর্ডের নাম দিয়ে রমরমা দেহ ব্যবসা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। যার মালিক শহরে কুখ্যাত মেয়েদের দালাল ও নারী পাচারকারী মো: আব্দুল গফুর গাজী ওরফে গফুর। এক সময় সে সাতক্ষীরা শহরের জর্জকোর্টে বাদাম বিক্রেতা ছিল, পরে রিক্সা চালক এবং থানায় দালালী করলেও দেহ ব্যবসা কার্যক্রম পরিচালনা করে তাকে কখনও পেছনে ফিরে তাকানো লাগেনি। তারপরে একে একে আরো কয়েকটি বিল্ডিং ভাড়া নিয়ে মেয়েদের মাধ্যমে দেহ ব্যাবসার কারখানা গড়ে তোলে। এতে তার সহযোগী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে তার আপন সহদর ভাই আজিজ সহ আরো কয়েকজন বহিরাগত লোক।

আরও জানা যায়, বর্তমানে সিটি কলেজ মোড় এলাকায় নয়ন ছাত্রাবাস নামক আলিশান বাড়ী, একাধিক হোটেল ও মৎস্য ঘের এবং বিপুল পরিমান সম্পদের পাঁহাড় গড়েছে গফুর। তারই ছোট ভাই আব্দুল আজিজ শহরের প্রাণকেন্দ্রে তিন তলা একটি বিল্ডিং ভাড়া করে রয়েল আবাসিক নামে এক পতিতালয়ে পাল্লা দিয়ে দেহ ব্যবসা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। কিন্তু তার আবাসিক হোটেলের কাগজ পত্র নেই। তবে ভাইয়ের মতো আইনের ফাঁক ফোকর দেখিয়ে কোটিপতি হওয়ার স্বপ্নে বিভোর হয়ে দেহ ব্যবসা বহুল তরীয়াতে চালিয়ে যাচ্ছে আজিজও।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, কয়েক বছরের মধ্যে গফুর থেকে দেহ ব্যবসাহী গফুর সাহেব নামে পরিচিত পেয়েছেন। সিটি কলেজের মোড় সংলগ্ন নয়ন ছাত্রাবাসে বিভিন্ন যাইগা থেকে মেয়েদের নিয়ে এসে সেখানে রাখে। তাছাড়া বিনেরপোতা সহ শহরের বিভিন্ন স্থানে সে কোটি টাকার সম্পত্তি কিনে রেখেছে। তার বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলেও তার ভাড়াটিয়া গুন্ডা ও প্রশাসনের কিছু অসাধু লোকদের দিয়ে তার নামে মিথ্যা মামলা ও নানা প্রকার হয়রানি করে। তিনি আরও জানান, গফুর কৌশলে স্থানীয় সরকারি দলের কিছু প্রভাবশালী লোকদের হাতে রেখে হোটেলের সাথে সাথে মাদক ব্যাবসা সহ নারী পাচার করার মতো ও ঘৃন্যত কাজও করে আসছে। তার আবসিক হোটেল গুলোতে সকল প্রকার মাদক দ্রব্য পাওয়া যায়।নাম বলতে অনিচ্ছুক এক যৌন কর্মী জানান, তার এক সপ্তাহ থাকার কন্টাক থাকলেও ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে জোর করে আটকে রেখে আরও কয়েকদিন থেকে বেশি টাকা আয় করে দিতে হয়। এমনকি কথা না শুনলে ম্যানেজারের কাছে তার কাজের পাওনা টাকা না দেওয়ার হুমকি দেয়। শুধু তাই নয় অনেক যৌন কর্মী ভুক্তভূগীদের অভিযোগ মানুষ নামের এই কসাই হোটেল মালিকরা তাদের দেহ বিক্রির টাকা আতœসাৎ করে। আর এমন অভিযোগ রয়েছে একাধিক। অল্প দিনে এসব পতিতালয়ের মালিক কোটিপতি বনে গেছেন।মেহেদীবাগে বসবাসরত অমিত হাসান জানান, গফুরের সাতক্ষীরা আবাসিক হোটেলের খদ্দের হলো স্কুল ও কলেজের উঠতি বয়সের ছাত্র ও মাদকাসক্ত যুবকেরা। দিন রাত সারাদিন হোটেল গুলোতে তালা মারা থাকে যাতে হঠাৎ করে কেউ হোটেল গুলোতে প্রবেশ করতে না পারে। মাঝে মধ্যে প্রশাসনের লোক দেখানো ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করলেও তার খবর আগে থেকে হোটেল মালিকেরা পেয়ে যায়।তিনি আরও জানান, সরকারের আবাসিক হোটেলের যে সব আইন বিধিমালা রয়েছে তা উপেক্ষা করেই চালিয়ে যাচ্ছে আবাসিক নামে প্রকাশ্য দেহ ব্যবসা। জেলা প্রশাসকের অনুমতি এবং পৌরসভার ট্রেড লাইসেন্স সরকারী আইন সংস্থার কাগজপত্র অবৈধ থাকালেও তারা যেন কোন কিছুই তোয়াক্কা না করেই বহুল তরীতে চালিয়ে যাচ্ছে এই ঘৃন্য জঘন্ন দেহ ব্যবসা। প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তা এবং একটি প্রভাবশালী মহলের মদদে বহুল তরীয়াতে চালিয়ে যাচ্ছে আবাসিক নামে দেহ ব্যবসা। এ যেন বাজারের পণ্যের মতো ডেকে ডেকে খরিদ্দারের প্রতিযোগিতায় নেমেছে তারা। হোটেলের সামনেই দুই জন করে কর্মচারী দিয়ে খরিদ্দার কন্টাক করার জন্য নিয়োজিত রয়েছে। শুধু তাই নয় তারা আবার গোয়েন্দা বেশে নিয়োজিত রেখেছে। এভাবেই বিভিন্ন কৌশলে তারা অবাধে চালিয়ে যাচ্ছে এই দেহ ব্যবসা। তাইতো সচেতন মহলের প্রশ্ন? এদের পেছনে কারা? উত্তর জানা থাকলেও বলার এবং প্রতিবাদের কোন ভাষা নেই। কারণ খারাপের সংখ্যায় বেশি। প্রতিবাদের সাহস যেন তারা হারিয়ে ফেলেছে। তাই প্রতিদিন সাতক্ষীরা আবাসিক হোটেলে রমরমা দেহ ব্যবসা চললেও কারও কোন মাথা ব্যাথা নেই।নাগরিক কমিটির সদস্য সুধাংশ জানান, অতিরিক্ত টাকার লোভে সারা মাস গফুর তার হোটেলে দেহ ব্যবসা কার্যক্রম পরিচালনা করে অল্প দিনে কোটিপটি হয়েছেন। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তার হোটেলে দেহ ব্যবসা কার্যক্রম চললেও কেউ তাকে দমাতে পারেনি। তাছাড়া প্রতিটি হোটেলেই গোপন পথ রয়েছে যার মাধ্যামে অভিজান শুরুর আগেই তারা পতিতাদের হোটেল থেকে বার করে দেই। বর্তমান পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমান মহোদয়ের দৃঢতার কারণে সাতক্ষীরা শহর প্রায় মাদক মুক্ত হয়েছে। তাই বর্তমান সাতক্ষীরার সচেতন এলাকাবাসীর একটাই প্রত্যাশা, মাননীয় পুলিশ সুপার মহোদয় এ সকল অবৈধ হোটেল নামধারী পতিতালয় গুলো বন্ধ করার জন্যে বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহন করবেন। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হোটেলটি বন্ধ রাখার জন্য হস্তক্ষেপ কামনা করছি।এ বিষয়ে জানার জন্য সাতক্ষীরা আবাসিক এর মালিক মো: আব্দুল গফুর কে ফোন করলে ফোনটি রিসিভ করে কথা বলেনি।এ বিষয়টি জানতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমান কে একাধিকবার ফোন করলেও তার ফোনটি রিসিভ হয়নি।জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল জানান, আমি শুনেছি সাতক্ষীরার প্রায় আবাসিক হোটেলগুলোতে রমরমা দেহ ব্যবসা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। তবে কোন পত্রিকায় নিউজ বা কেউ অভিযোগ না করলে তো আমরা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারিনা। তাই আমাদের কাছে এ ধরণের কোন অভিযোগ আসলে তদন্ত সাপেক্ষে আমরা তাৎক্ষিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

See also  সাতক্ষীরা শহরে আবাসিক হোটেল নামে গড়ে উঠেছে যৌন পতিতালয়!