মহাদেশ গুলোর নামকরন কিভাবে হল ? How Did The Continents Get Their Names

মহাদেশ গুলোর নামকরন কিভাবে হল ? How Did The Continents Get Their Names

মহাদেশ গুলোর নামকরন কিভাবে হল ? How Did The Continents Get Their Names

পৃথিবীর শুরুতে কোন মহাদেশ ছিল না। তাহলে কেমন করে এলো মহাদেশ? কে রাখলেন এই মহাদেশগুলোর নাম? আজ আপনাদের সামনে তুলে ধরবো সেই তথ্য।

মহাদেশ বলতে পৃথিবীর বড় ভূখণ্ডসমূহকে বুঝায়। পৃথিবীতে ৭ টি মহাদেশ রয়েছে। মহাদেশসমূহ হল এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা, উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা, এন্টার্কটিকা, ও অস্ট্রেলিয়া। দ্বীপসমূহকে পার্শ্ববর্তী মহাদেশের অন্তর্গত হিসেবে ধরা হয়। এর ফলে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপসমূহকে অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের অন্তর্ভুক্ত করে নতুন ভূ-রাজনৈতিক অঞ্চল ওশেনিয়া সৃষ্টি করা হয়েছে।

১. এশিয়া মহাদেশঃ

পৃথিবীর বৃহত্তম মহাদেশ এশিয়ার নামকরণ করা হয়েছে ‘আসিরিয়ান’ বা ‘আসু’ শব্দ থেকে। রোমান সাম্রাজ্যের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশের নাম ছিল আসিরিয়ান, এবং সেই নাম থেকেই এই মহাদেশের নামকরণ করা হয়েছে ‘এশিয়া’। আবার কারও কারও মতে; পূর্বে রোমানরা এশিয়া বলতে দুটি প্রদেশ বোঝাতো। প্রথমত এশিয়া মাইনর, এবং দ্বিতীয়ত এশিয়া মেজর। এশিয়া শব্দটি ৪৪০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে হেরোডোটাস তার বই হিস্ট্রোসে ব্যবহার করেছিলেন। যদিও তখন তিনি এই শব্দটি দিয়ে ইজিয়ান সাগরের পূর্বদিকের ভূখণ্ডকে বুঝিয়েছিলেন। এশিয়া শব্দটি প্রাচীন গ্রিক শব্দ ‘Aσία’ থেকে এসেছে। আর এই গ্রিক শব্দটির মূলে রয়েছে ফিনিশীয় শব্দ ‘asu’, যার অর্থ পূর্ব এবং আক্কাডিয়ান শব্দ ‘asuÕ’, যার অর্থ সূর্যের উদয়। এই হিসেবে এশিয়ার অর্থ দাঁড়ায় সূর্য উদয়ের দেশ।

See also  পুরুষ শরীরে কিসের খোঁজে পাগল হয়ে যায় মেয়েরা!

২.ইউরোপ মহাদেশ

ইউরোপ মহাদেশের নামকরণ কিভাবে হয়েছে সে বিষয়ে সঠিক কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। কিন্তু ধারণা করা হয় ইউরোপে প্রচুর মালভূমি আছে আর এই মালভূমিকে নির্দিষ্ট করতে এ মহাদেশের নাম রাখা হয়েছে ইউরোপ।

বিপরীত মতে; ইউরোপ শব্দটি এসেছে ‘ইউরোপা’ থেকে। ইউরোপা ছিলেন অতি সুন্দরী এক নারী, প্রথম দেখায় যার প্রেমে পড়ে যান দেবতা জিউস। তিনি সাদা ষাঁড়ের রূপ নিয়ে এসে তাকে অপহরণ করেছিলেন। ইউরোপা শব্দের উৎপত্তি নিয়ে দুটি মতবাদ রয়েছে। অনেকে মনে করেন- ১. ইউরোপা শব্দটির উদ্ভব আক্কাডিয়ান শব্দ ‘erebu’ থেকে, যার অর্থ অস্ত যাওয়া এবং ফিনিশীয় শব্দ ‘ereb’, যার অর্থ সন্ধ্যা ও পশ্চিমের সমন্বয়। ২. আবার অনেকের মতে, ইউরোপা শব্দটি গ্রিক শব্দ ‘eurys’, যার অর্থ প্রশস্ত এবং ‘ops’, যার অর্থ মুখমণ্ডল থেকে এসেছে। এখানে ইউরোপার অর্থ হল প্রশস্ত মুখমণ্ডল। তবে তখন ইউরোপ বলতে বোঝানো হয়েছিল বর্তমান তুর্কির একটি অংশকে।

See also  অন্যের বাসায় বেড়াতে গিয়ে যে ৯টি কাজ কখনোই করবেন না

৩.আফ্রিকা মহাদেশঃ

আফ্রিকা মহাদেশের নামকরণ করা হয়েছে সেখানের ‘বর্বর’ এক জাতির নামানুসারে। প্রথম দিকে আফ্রিকা নামে একটি ‘প্রদেশের’ নামকরণ করা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে এই নাম পুরো মহাদেশে ছড়িয়ে পড়ে, ফলে এ মহাদেশ আফ্রিকা নামে পরিচিতি পায়। অন্য একটি দল মনে করেন, আফ্রিকা শব্দটি এসেছে ফিনিশীয় শব্দ ‘erebu’ থেকে। যার অর্থ ধূলা। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ল্যাটিন প্রত্যয় ‘ereb’, যার অর্থ ভূমি। অর্থাৎ এখানে আফ্রিকা শব্দটির অর্থ দাঁড়ায় ‘ধূলারভূমি’ বা ‘দ্যা ল্যান্ড অব ডাস্ট’। রোমানরা জয় করেছিল আফ্রিকার উত্তর দিকের অঞ্চল। মনে করা হয়, উত্তরের মরুভূমি এবং রুক্ষ-শুষ্ক আবহাওয়ার জন্য তারা এই অঞ্চলের এমন নামকরণ করে।

৪. উঃ আমেরিকা ও ৫.দঃ আমেরিকাঃ

আমেরিকা মহাদেশের নামকরণ করা হয়েছে বিখ্যাত পর্যটক ‘আমেরিগো ভেসপুচির’ নামানুসারে। বিখ্যাত এই পর্যটক জন্মগ্রহণ করেন ১৪৫২ সালে এবং মৃত্যুবরণ করেন ১৫১২ সালে। বিখ্যাত এ পর্যটকের নাম থেকে আমেরিকা মহাদেশের নামকরণ করার পর আমেরিকাকে উত্তর ও দক্ষিণ ভাগে ভাগ করা হয়। ফলে উত্তর আমেরিকা ও দক্ষিণ আমেরিকা নামে দুটি মহাদেশের জন্ম হয়।

See also  আমেরিকাতে ধনী হতে গেলে কত টাকা থাকতে হয় জেনে নিন

৬. অস্ট্রেলিয়া মহাদেশঃ

অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের নামকরণ করা হয়েছে ল্যাটিন শব্দ ‘অস্ট্রেলিস’ থেকে। অস্ট্রেলিস শব্দের অর্থ পূর্বাঞ্চলীয়। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডসহ পূর্বাঞ্চলের কয়েকটি দ্বীপ নিয়ে এই মহাদেশ গঠিত বলে একে অস্ট্রেলিয়া বলা হয়। দ্বীপ বেষ্টিত অস্ট্রেলিয়া মহাদেশকে আবার ওশেনিয়াও বলা হয়ে থাকে। অস্ট্রেলিয়াকে ওশেনিয়া নামটি দিয়েছিলেন বিখ্যাত ভূগোলবিদ কনরাড মাল্ট-ব্র“ন।

৭.আন্টার্কটিকা মহাদেশঃ

বরফ আচ্ছাদিত মহাদেশ আন্টার্কটিকার নাম এসেছে গ্রিক শব্দ আর্কটিক থেকে। আর্কটিক শব্দের গ্রিক অর্থ ভালুক। আন্টার্কটিকা মহাদেশটি ‘গ্রেট বিয়ার’ নক্ষত্রপুঞ্জের নিচে অবস্থিত বলে এই মহাদেশের নামকরণ এমন করা হয়েছে। এছাড়াও এন্টার্কটিকা মহাদেশে প্রচুর পরিমাণে সাদা ভালুক দেখতে পাওয়া যায়। আবার কারও কারও মতে; এন্টার্কটিকা নামটির উৎপত্তি হয় গ্রিক শব্দ ‘এন্টার্কটিক’ থেকে। যার অর্থ উত্তর দিকের বিপরীতে। সত্যিই এটি হলো পৃথিবীর সব থেকে দক্ষিণের ভূখণ্ড। ধারণা করা হয়, জন জর্জ বার্থলোমিউ নামক স্কটিশ মানচিত্রকর সর্বপ্রথম এই নামটি ব্যবহার করেন।