দিনাজপুর শহরে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসে দেহ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে পতিতারা। এসকল পতিতাদের অধিকাংশই নোয়াখালী-লক্ষিপুর-ফরিদপুর জেলার।
দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত এসকল পতিতারা দেহব্যবসার পাশাপাশি নারী ও শিশু পাচার কাজে লিপ্ত রয়েছে।
দিনাজপুর জেলা শহরের আবাসিক এলাকা গুলোতে বাড়ি ভাড়া নিয়ে দেহ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত পতিতারা। এসকল পতিতারা নিজেদের সঠিক ঠিকানা গোপন রাখে।
সরেজমিনে তদন্ত করে দেখা গেছে, দেহ ব্যবসার কাজে লিপ্ত এসকল পতিতাদের অধিকাংশের সঠিক বাড়ি নোয়াখালী-লক্ষিপুর-ফরিদপুর জেলায়। নোয়াখালী-লক্ষিপুর-ফরিদপুরসহ জেলার সকল বহিরাগত পতিতাদের নিয়ন্ত্রন করছে লক্ষিপুর জেলার হাজিগঞ্জ বাজার এলাকার খালেক মাঝির কন্যা ও বরিশাল জেলার রুবেলের স্ত্রী সাইমুন (২৮)।
আলোচিত সাইমুন নোয়াখালী-লক্ষিপুর-ফরিদপুর এলাকা থেকে বিভিন্ন গরীব অসহায় পরিবারের শিশু-কিশোরীদের দিনাজপুরে এনে দেহ ব্যবসায় লিপ্ত করছে। যে সকল শিশু-কিশোরী দেহ ব্যবসার উপযোগী না হলে তাদের দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতে পাচার করে বলে জানাযায়।
সাইমুনের এসকল কর্মকান্ডের সাথে প্রশাসনের একটি মহল জড়িত রয়েছে বলে ঢাকার সায়দাবাদ এলাকার রাজ্জাকের স্ত্রী সুইটি নামের একজন পতিতা একথা জানায়।
এছাড়া শহরের রাজবাঢি, গুনঞ্জাবাড়ি, ফকিরপাড়া, নয়নপুর, বালুবাড়ী, চক্ষু হাসপাতাল মোড়, উপশহরের প্রতিটি ব্লকসহ বিভিন্ন স্থানে এসকল পতিতারা ভাড়াটিয়া হিসেবে বাড়ি ভাড়া নিয়ে দেহ ব্যবসা করে।
দিনাজপুর শহরের অধিকাংশ বাড়ি মালিকরা বাড়ি ভাড়া দেওয়ার নিয়ম-নীতি না মেনেই এসকল পতিতাদের বাড়ি ভাড়া দিচ্ছে। বাড়ি ভাড়া দেওয়ার সময় বাড়ির মালিকেরা সঠিক ঠিকানা যাচাই করেনা, পেশাগত ভাবে কোন কাজে লিপ্ত, স্থানীয় থানায় ভাড়াটিয়া সম্পর্কে কোন ধরণের তথ্যবা খোজ খবর না নিয়ে ভাড়া দিয়ে থাকে।
দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে দিনাজপুর জেলায় এসে বীরদর্পে দেহ ব্যবসার মতো অসামাজিক কাজ চালিয়ে গেলেও কেউ যদি কোন ধরনের প্রতিবাদ করার চেষ্ঠা করে তাহলে তাদের পুলিশ দিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এবিষয়ে পতিতা ও শিশু পাচারকারী সাইমুনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি আমাদের বলেন, আমার সঠিক ঠিকানা দিনাজপুরের কেউ জানেনা। আমি মূলত কোন জেলা থেকে এসেছি এটা কাউকে বলবো না।
আমি ফেটের দায়ে দেহ ব্যবসা করতাছি কোন ধরনের অন্যায় করতাছিনাা। কিন্তু শিশু-কিশোরীদের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, গরীব ঘরের পোলাহান ওরা এইটা ছাড়া কি করবো?
সে সময় তার সঙ্গে থাকা আরো এক সালমা নামের পতিতা বলে উঠেন আমরা পোলাহানগো কষ্ট দেখতে না পাইরা দিনাজপুরে নিয়া আইছি দুইটা পায়সা ইনকাম করার লিগা। এতে হেও বাচবো আমরা বাচুম। তাদের সাথে স্থানীয় প্রশাসনের সংশ্লিষ্টতা যানতে চাইলে তারা বলেন, আমরা প্রথমে টার্মিনালের পিছনে ৩ বোনের বাড়িতে দেহ ব্যবসার জন্য আসি।
পরবর্তীতে তাদের বাড়ি থেকে কিছু প্রশাসনের খদ্দেরের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলে আমরা নিজেরাই বাড়ি ভাড়া নিয়ে তাদের সাহসেই দেহ ব্যবসা করছি। শিশু-কিশোরীদের পাচার সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে চাইলে সাইমুন আমাদের বলেন, এইটা মিথ্যা কথা আমরা কোন শিশু-কিশোরীদের পাচার করিনা।
সাইমুনসহ এসকল পতিতাদের বিষয়ে জেলার বিভিন্ন মানবাধিকারের উপর কাজে নিয়োজিত এনজিওর কর্মকর্তারা বলছেন এরা সমাজ ও সমস্ত জাতীর শত্রু এদের দ্রুত আইনের মাধ্যমে নিয়ে আসতে হবে।
তা না হলে এমন এক সময় আসবে যখন এর ভয়াবহ রুপ ধারণ করবে। উল্লেখ্য যে, চলতি বছরের ৫ মার্চ রাত্রী ৮টার দিকে দিনাজপুর শহরের বালুবাড়ি পল্লিশ্রী সম্মুখে অবস্থিত ৪ তলা ভবনে খদ্দেরসহ এই আলোচিত সাইমুনকে স্থানীয় এলাকাবাসী হাতে নাতে আটক করে।
পরে স্থানীয় এলাকাবাসী সাইমুনসহ আটকৃত ৩ জনকে পুলিশে সপর্দ করেন। কিন্তু কোন এক অদৃশ্য কারণে সে সময় দায়িত্বরত পুলিশের এসআই বর্তমানে জয়পুরহাট লালপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল্লাহিল জামান তাদের ছেড়ে দেয়। এসকল পতিতাদের আশ্রয়দানে স্থানীয় এলাকাবাসীর কাছে একজন পৌর কাউন্সিলর গণধোলাই খায়।
Source:: https://www.uttorbangla.com/12630