কক্সবাজারের লালদীঘির পাড়সহ কলাতলী হোটেল-মোটেল জোনের ব্যবসায়ীরা শুধু পর্যটকদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া নিয়ে ঠেকায় ফেলে গলা কাটছেনা, তারা আবাসিক হোটেল ও কটেজ ব্যবসার আড়ালে জমজমাট যৌন ও ইয়াবা ব্যবসা করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। বিশেষ করে সেনাবাহিনীর (অব:) মেজর সিনহা হত্যার পর থেকেই সব পুলিশ বদলি করে ফেলার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে চলমান করোনাকালীন সময়ও এসব অবৈধ ব্যবসা চাঙ্গা রয়েছে হোটেল মোটেল জোনে। এর কারণে পর্যটকসহ এলাকার যুব সমাজ ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে বলে অভিযোগ সচেতন মহলের। নবাগত পুলিশের এখনও কোন ধরণেন তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না।
স্থানীয় প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক ব্যক্তির ছত্রছায়ায় দিন-দুপুরে প্রকাশ্যে এসব অবৈধ ব্যবসা চলছে বলে অভিযোগ সচেতন মহলের। বিশেষ করে আগেই এসব হোটেল ও কটেজের মালিকরা প্রশাসনকে প্রতিমাসে মোটা অংকের টাকা দিয়ে অবৈধ এসব ব্যবসা করে যাচ্ছে বলে প্রাপ্ত সূত্রে জানা যায়। তখন মাঝে মধ্যে প্রশাসন লোক দেখানো কিছু অভিযান চালিয়ে যৌনকমর্ী ও দালালদের আটক করলেও কয়েকদিনের মধ্যে তা আবারও শুরু হতে দেখা যায়। ফলে কিছুতেই থামছে না এই অপকর্ম। প্রকৃত পক্ষে কটেজের মালিক, ম্যানেজার ও বয় ছেলেদের যোগসাজসেই চলছে এই ব্যবসা। যে অপরাধের শেল্টার দেন স্থানীয় রাজনৈতিক ও প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তি। কিন্তু বর্তমানে নবাগত পুলিশ প্রশাসনের ভুমিকা মোটেই দেখা যাচ্ছেনা। এখন হোটেলে তারা প্রকাশ্যে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
অভিযোগ আছে-কলাতলী লাইট হাউস এলাকার সাংস্কৃতিক কেন্দ্র সংলগ্ন হোটেল-মোটেল জোন এলাকার কলাতলী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রর সামনে ঢাকার বাড়ি কটেজ, সি-টাউন কটেজ, সবুজ কটেজ, জাহান কটেজ, এসএস গেস্ট হাউস, সমুদ্র নিবাস, আমের ড্রিম কটেজ, শাহনুর কটেজ, সবুজ কটেজ, শারমীন কটেজ, আল-কাফি কটেজ, জাহান রিসোর্ট, দিমান কটেজ, আল জিয়া গেস্ট হাউস, ব্লু বে রিসোর্ট, মমস্ রিসোর্ট, হোটেল ব্ল্যাক টিউলিপ, হোসাইন রিসোর্ট, রমজান কটেজ, হিল ফ্ল্যাক্ট, এস এ গেস্ট ইন, বীচ গার্ডেন, জি এম গেস্ট হাউস, জয়নাল রিসোর্ট ও মিহা রিসোর্টসহ অধিকাংশ হোটেল ও কটেজে দিনের বেলায় প্রকাশ্যে চলে যৌন ও ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এসব রিসোর্টে যেন এক একটি মিনি পতিতালয়। এছাড়া কক্সবাজার শহরের হোটেল নিশীথা-১, নিশীথা-২, পাঁচতারা, নজরুল রোডিং, আহছনিয়া বোডিংয়েও চলে এসব যৌনকর্ম।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দু’সিফটে ভাগ করে এসব রিসোর্টে চলে প্রকাশ্যে পতিতা ব্যবসা। দিনে চলে রেজিষ্টার বিহীন সময় নির্ধারনি চুক্তি ভিক্তিক দেহব্যবসা আর রাতে চলে হোটেলে অবস্থারত বর্ডারদের সিরিয়াল ভিত্তিক মাদক ব্যবসা। শারমিন রিসোর্টের কর্মরত ম্যানেজার ও হোটেল বয় স্থানীয়সহ ঢাকার বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জ থেকে মহিলা ও উঠতি বয়সের তরুণী সংগ্রহ করে প্রতিদিন তাদেরকে দিয়ে ঘণ্টা ও নাইট হিসেবে এই রিসোর্টে অবৈধভাবে দেহব্যবসা অবৈধ টাকার পাহাড় করেছে। ফলে ধ্বংসের পথে ধাবিত হচ্ছে তরুণ ও যুব সমাজ। এছাড়াও বিভিন্ন কটেজ গুলোতে দিন দুপুরে অহরহ চলছে অসামাজিক কার্যকলাপ। পর্যটন এলাকার সুনাম রক্ষার্থে এসব কটেজ গুলোতে প্রায় চলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান। তবুও থামছে না কটেজের এই ব্যবসা। এসব অপর্কমের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে নষ্ট হয়ে যাবে পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সামাজিক পরিবেশ।
সচেতন মহলের দাবি, পুলিশ, র্যাবসহ আইন-শৃংখলাবাহিনীর সদস্যরা এসব হোটেলে অভিযান চালিয়ে খদ্দরসহ যৌনকমর্ী ও দালালদের আটক করলেও হোটেল কর্তৃপক্ষ ও দায়িত্বে নিয়োজিত ম্যানেজারদের আটক না করায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এসব পতিতা ব্যবসা। যৌনকমর্ীদের তালিকায় রয়েছে বিভিন্ন স্কুল,কলেজ ও মাদ্রাসা পড়–য়া ছাত্রী, বিভিন্ন এনজিও সংস্থায় কর্মরত মহিলা, প্রবাসীর স্ত্রীসহ বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জের উঠতি বয়সের তরুণীরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এসব কটেজের সামনের একাধিক দোকানদার জানান, হোটেল কর্তৃপক্ষ থানা পুলিশকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে প্রকাশ্যে দিন দুপুরে এসব অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে আসছে র্দীঘদিন ধরে।
সূত্রে জানা যায়, যৌন ব্যবসার পাশপাশি মাদকের হাট বসিয়ে আসছিল। উক্ত অপকর্মের নেতৃত্বে দিয়ে আসছে শহরের চিহ্নিত মাদক ও যৌন ব্যবসায়ীরা। জানা যায়, বিভিন্ন দালালরা ঢাকা, কুমিল্লা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মোটা অংকের টাকার লোভ দেখিয়ে উঠতি বয়সের তরুণীদের সংগ্রহ করে এসব কটেজ ও হোটেল নিয়ে আসে।
অনুসন্ধানে আরো দেখা যায়, একশ্রেনীর দিনমজুর থেকে আরম্ভ করে মধ্য বয়সের কর্মবিমুখ মানুষের পদভারে মুখরিত থাকে এই কটেজগুলো। শুধু তাই নয়, অনেক ক্ষেত্রে কলেজের নাম করে বান্ধবীকে নিয়ে উঠে কোন না কোন কটেজে। যার ফলে বৃদ্ধি পায় অপরাধ প্রবণতা।