আপনি কি নিজের কাছেই বিষাক্ত তাহলে উপায় জেনে নিন

নিজেকে কষ্ট দিয়ে নিজের অজান্তেই স্বস্তি বোধ করা খুব খারাপ একটি অভ্যাস। এই অভ্যাস এখনই বন্ধ করতে হবে। নয়তো আপনার আত্মবিশ্বাসে এর দীর্ঘস্থায়ী কুপ্রভাব পড়তে পারে এবং জীবনকে করে তুলতে পারে আরও বেশি কঠিন। আর তার প্রভাব পড়তে পারে সম্পর্কে। তাই এই অভ্যাসগুলোতে অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।

তাই চলুন জেনে নেওয়া যাক যে ৭ লক্ষণ দেখে বুঝবেন আপনি নিজের প্রতি টক্সিক।

১. কোনো ভুল ছাড়াই বার বার ‘সরি’ বলা:

টুকটাক ভুলের জন্য আমরা সবাই “সরি” বলে দুঃখ প্রকাশ করি। ভুলটা অন্যজনের, নিজে কোনো ভুল করেননি, অথচ ক্রমাগত সবার নিকট দুঃখ প্রকাশ করছেন- এটি আত্মসম্মান হ্রাস বা সংঘাতের ভয়ের লক্ষণ। চেষ্টা করুন, ধীরে ধীরে এই স্বভাব বদলানোর। অন্যের ভুলের জন্য নিজের দুঃখ প্রকাশ করা মানে, তার ভুলটি নিজের ঘাড়ে নিয়ে নেওয়া। এতে আত্মবিশ্বাস কমতে কমতে তলানীতে ঠেকে। তাই কখন ক্ষমা চাওয়া প্রয়োজন এবং কখন নয়, তার গুরুত্ব বুঝতে হবে।

 

২. সবসময় নিজের প্রাপ্যের চেয়ে কম আশা করা:

সম্পর্ক, কাজ কিংবা ব্যক্তিগত অর্জন- যাই হোক না কেন, নিজের প্রাপ্যের চেয়ে কম গ্রহণ করা অত্যন্ত ক্ষতিকারক প্রবণতা। এই ধরণের প্রবণতা, ব্যর্থতা কিংবা প্রত্যাখ্যানের ভয় থেকে তৈরি হতে পারে। আর এই স্বভাব বিশ্বাস করতে বাধ্য করে যে, আপনি আরও ভালো সুযোগের যোগ্য নন। যে চাকরি করছেন তাতে সন্তুষ্ট নন, অথচ আপনার বিশ্বাস, এর চেয়ে ভালো কিছু পাবেন না। তাহলে আপনি নিজের বিকাশে নিজেই বাধা দিচ্ছেন। আগে নিজের মূল্য বুঝতে হবে, তা না হলে এই চক্র থেকে কিছুতেই মুক্তি পাবেন না।

 

৩. কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়াই বার বার ফোন চেক করা:

মোবাইল ফোনে নতুন কোনো মেসেজ নেই, এমনকি বাস্তবে কেউ আপনার খোঁজ খবরও নেবেন না। এটা জেনেও বার বার মোবাইল ফোন চেক করছেন। এটি উদ্বেগ কিংবা বাহ্যিক বৈধতার প্রয়োজনের লক্ষণ। অন্যের থেকে আশ্বাস চাওয়ার অভ্যাস অপ্রয়োজনীয় চাপ তৈরি করতে পারে। নিজের জীবনকে অন্যের প্রতিক্রিয়ার ভরসায় রাখবেন না। নিজের কাজ এবং জীবনের প্রতি যত্নশীল হোন।

See also  কত বছর পূর্তিতে কোন জয়ন্তী হয় জেনে নিন

 

৪. সমালোচনাকে ব্যক্তিগতভাবে গ্রহণ করা:

গঠনমূলক সমালোচনা শুনেও কি কিছুতেই আত্ম-সন্দেহ দূর হচ্ছে না এবং দ্রুত প্রতিক্রিয়া দিয়ে ফেলছেন- তাহলে সচেতন হোন। সমালোচনাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিন। তাতে জীবনে উন্নতি হয়।

 

৫. নিজের যত্ন নিতে গিয়ে অপরাধবোধ:

নিজের যত্ন নিতে গিয়ে অপরাধবোধ হওয়া সেল্ফ-টক্সিসিটির লক্ষণ। শরীর, ত্বক, চুলের যত্ন নেওয়া কিংবা মৌলিক চাহিদা পূরণ করাকে অনেকে স্বার্থপরতা বলে মনে করেন। ক্লান্তি হলে বিশ্রাম নেওয়া দোষের কিছু নয়। মনে রাখবেন, নিজের যত্ন কোনো বিলাসিতা নয়, এটি আপনার সুস্থতার জন্য প্রয়োজনীয়।

 

৬. অন্যের মতামত নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা করা:

অন্যের মতামত কিংবা মন্তব্য নিয়ে ক্রমাগত উদ্বিগ্ন থাকা কিংবা তাদের সঙ্গে নিজেকে তুলনা করা আপনার আত্মসম্মানকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অন্যদের জীবনকে অনেক ভালো বলে মনে হতে পারে। মনে রাখবেন, সেই সব কিন্তু সত্যি হয় না। সবই প্রায় সাজানো হয়। অন্যের পার্টি করা, বেড়াতে যাওয়া, দামি পোশাক কিংবা গাড়ি কেনার ছবি দেখে বিভ্রান্ত হবেন না। অন্যদের সঙ্গে নিজেকে তুলনা করার পরিবর্তে নিজের কাজে মন দিন। এতে আপনার আত্মবিশ্বাস ও মানসিক শান্তি উন্নত হবে।

 

৭. সবসময় অন্যের প্রতি সহানুভূতি দেখানোর অভ্যাস:

নিজের প্রয়োজনের বিনিময়ে অন্যদের প্রতি অত্যধিক সহানুভূতিশীল হওয়া, আত্মসম্মান হ্রাসের লক্ষণ হতে পারে। লোককে ‘‘না’’ বলতে না শিখলে বা নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে সমস্যা হলে অন্যরা আপনার ভদ্রতার সুযোগ নেবেই। আবার অন্যের মন রাখতে অতিরিক্ত কাজের জন্য ‘‘হ্যাঁ’’ বললেও বিপদ। তাতে চাপ আরও বাড়বে। মানসিক সুস্থতা বজায় রাখার জন্য এইসব কিছুর সীমা নির্ধারণ করা অপরিহার্য।

______________

সূত্র: dhakatribune.com