অন্যের বাসায় বেড়াতে গিয়ে যে ৯টি কাজ কখনোই করবেন না

অন্যের বাসায় বেড়াতে গেলে কিছু নিয়ম না মানলে সম্পর্কের অবনতি হয়।

১. না বলে-কয়ে ঘরে ঢোকা:

অন্যের বাসায় বেড়াতে গিয়ে অনুমতি ছাড়া কোনো ঘরে ঢুকবেন না। এটা খুবই সাধারণ একটি আদবকেতা। এমনকি কোনো ঘরের দরজা যদি খোলাও থাকে, তবুও ভেতরের কাউকে জিজ্ঞাসা না করে হঠাৎ ঢুকবেন না। দরজার কাছে গিয়ে একটু অপেক্ষা করুন। দরজায় টোকা দিন কিংবা কলবেল থাকলে চাপ দিন। এককথায় আগে অনুমতি নিন, অপেক্ষা করুন, তারপর ঢুকুন।

 

২. ঘুরেফিরে দেখা:

দাওয়াতে গিয়ে আমন্ত্রণকারীর বাসা ঘুরেফিরে দেখাটা একটা বদঅভ্যাস। আমন্ত্রণকারী যদি নিজে বাসা ঘুরিয়ে দেখান, সেটা ভিন্ন কথা। কিন্তু নিজে থেকে এদিক–সেদিক উঁকিঝুঁকি দিয়ে দেখা বেশ দৃষ্টিকটু। বিশেষ করে বাথরুম ও বেডরুম— এ দুটি জায়গায় কখনোই বিনা অনুমতিতে উঁকিঝুঁকি দেবেন না। হতে পারে আমন্ত্রণকারী বন্ধুর বাসাটা খুবই সুন্দর করে সাজানো। তাই দেখার ইচ্ছা হতেই পারে। পুরো বাসা ঘুরে দেখার খুব আগ্রহ থাকলে আমন্ত্রণকারীর কাছ থেকে অনুমতি নিন। জানতে চান ঘুরে ঘুরে দেখলে কোনো অসুবিধা আছে কি না।

See also  পড়াশোনা মনে রাখার ৮টি উপায়

 

৩. জুতা পরে ঘরে ঢোকা:

আপনার জুতা যতই সাফসুতরা থাক না কেন, জুতা পরে অন্যের বাসায় বা ঘরে ঢুকবেন না। আমাদের দেশে সাধারণত ঘরের মধ্যে কেউ বাইরে ব্যবহৃত জুতা পরেন না। তাই অন্যের বাসায় গিয়ে আগে দরজার মুখে জুতাটা খুলুন, তারপর ঢুকুন। যদি দেখেন আমন্ত্রণকারী নিজেই ভেতরে জুতা পরে আছে, তার দেখাদেখি হুট করে আপনিও জুতা পরে ঢুকবেন না। আগে অনুমতি নিন। সায় পেলে তারপর ভেতরে জুতাসহ ঢুকুন।

 

৪. ফ্রিজ খুলে দেখা:

অন্যের বাসায় দামি ও দৃষ্টিনন্দন ফ্রিজ থাকতেই পারে। অভ্যাসবশত আমরা অনেকেই অন্যের বাসায় গিয়ে ফ্রিজ খুলে দেখতে শুরু করি। ফ্রিজ নিয়ে নানা রকম প্রশ্নও করি। এটা নিতান্তই বদঅভ্যাস। আবার খিদে পেলে অনেকেই খাবারের সন্ধানে ফ্রিজ খুলে দেখেন। অন্যের বাসায় যাওয়ার পর আপনার খিদে লাগতেই পারে। খাবারের সন্ধানেই হোক কিংবা অভ্যাসবশত— ফ্রিজ কখনোই খুলে দেখা উচিত নয়।

 

৫. এসির সুইচ অন করা:

এসি চালালে বিদ্যুৎ বিল বেশি আসবে এটা স্বাভাবিক। যেহেতু এসির বিলটা আমন্ত্রণকারীকেই দিতে হয়, তাই অন্যের বাসায় গিয়ে নিজেই এসির সুইচ অন করা বা এসি ছাড়তে বলা একরকম অভদ্রতা। খুব গরম লাগলে কিছুক্ষণ স্থির হয়ে বসুন। সিলিং ফ্যানটা ছেড়ে দিতে বলতে পারেন। দেখবেন, গরমটা সয়ে এসেছে।

See also  আমি ছেলে পতিতা হতে চাই কিভাবে হবেন জেনে নিন ?

 

৬. ড্রয়ার হাতড়ানো:

হুট করে ড্রয়ার খুলে কিছু খোঁজা থেকে বিরত থাকুন। ড্রয়ারে অনেক সময় গোপন ব্যবহার্য জিনিস থাকতে পারে। দলিল, টাকাপয়সার মতো গুরুত্বপূর্ণ জিনিসও থাকে। তাই আমন্ত্রণকারীর ব্যক্তিগত নিরাপত্তার প্রতি সম্মান জানিয়ে ড্রয়ার বা কেবিনেট হাতড়ানো থেকে নিজেকে দূরে রাখুন।

 

৭. বিলের কাগজ পড়ে দেখা:

অন্যের বাসায় টেবিলের ওপর বা ড্রয়ারে বিদ্যুৎ বিল বা পানির বিলের কাগজ পড়ে থাকতেই পারে। কিন্তু সেটা হাতে নিয়ে মনোযোগ দিয়ে পড়ে দেখা অভদ্রতা। হতে পারে আমন্ত্রণকারী বন্ধুটি একটু সংযমী, সে হয়তো প্রয়োজনের বাইরে বিদ্যুৎ খরচ করে না। তাই তার বিলটাও কম আসে। কিন্তু সেটা আপনাকে জানানোর কোনো ইচ্ছাই তার নেই। তাই যেকোনো ধরনের বিল পড়ে দেখা থেকে বিরত থাকুন।

See also  বউ বা স্ত্রীকে যেভাবে আদর করবেন জেনে নিন

 

৮. ধূমপান করা:

আপনি ধূমপায়ী হতেই পারেন। কিন্তু আপনার আমন্ত্রণকারীও যে ধূমপায়ীই হবেন, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। কিংবা ধূমপায়ী হলেও বাসার ভেতরে ধূমপান করা তিনি পছন্দ করেন না। কারণ, বাসার ভেতরে ধূমপান করলে পরিবারের অধূমপায়ীদের শারীরিক ক্ষতি হয়। শিশুদের জন্য যা আরও মারাত্মক। তা ছাড়া অগ্নিকাণ্ডের আশঙ্কাও থাকে। তাই অন্যের বাসায় বেড়াতে গিয়ে ধূমপান থেকে বিরত থাকুন। এমনকি অনুমতি নিয়ে বারান্দায় গিয়েও ধূমপানের দরকার নেই। ধৈর্য ধরুন। সেখান থেকে বের হয়ে ধূমপান করুন।

 

৯. ওয়াই–ফাইয়ের পাসওয়ার্ড চাওয়া:

ওয়াই–ফাইয়ের পাসওয়ার্ড সবাইকে জানিয়ে বেড়ানোর মতো জিনিস নয়। কারোর ব্যক্তিগত সাইবার নিরাপত্তার খাতিরে তা খুবই গোপনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। তাই অন্যের বাসায় বেড়াতে গিয়ে আগেই ওয়াই–ফাইয়ের পাসওয়ার্ড জানতে চেয়ে বসবেন না। খুব বেশি সময় থাকার দরকার হলে আমন্ত্রণকারী আপনাকে নিজে থেকেই পাসওয়ার্ড জানিয়ে দেবেন। তা না হলে আগে থেকে মুঠোফোনে ইন্টারনেট কিনে রাখুন। সবচেয়ে ভালো হয় অন্যের বাসায় গিয়ে মুঠোফোনে একেবারেই হাত না দেওয়া।

________________

সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট