ছাত্রীকে দিয়ে শিক্ষিকার দেহ ব্যবসার ফাঁদ! ঠাকুরগাঁও

ছাত্রীকে দিয়ে শিক্ষিকার দেহ ব্যবসার ফাঁদ! ঠাকুরগাঁও

ন্যাক্কারজনক ঘটনার শিকার এক অসহায় স্কুলছাত্রীর সাথে ঘটে যাওয়া অন্যায়ের প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে উত্তরের শান্ত জনপদ ঠাকুরগাঁও জেলা। শুধু ঐ ছাত্রীর সহপাঠীরারাই নয়, পুরো স্কুলের ছাত্রী অভিভাবকসহ সাধারন মানুষ উদ্বিগ্ন এই ঘটনায়। একইসাথে একজন ছাত্রীর সাথে একজন শিক্ষিকার এমন কুরুচিপুর্ন আচরনের নিন্দাসহ প্রতিবাদ জানাচ্ছেন সকলেই।

সদর উপজেলা সালন্দর কামরুল হুদা চৌধুরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহ-গ্রন্থাগারিক শিক্ষিকা শরিফা খাতুনের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে কৌশলে রংপুরে নিয়ে গিয়ে তাকে জোরপুর্বক অসামাজিক কাজে লিপ্ত করানো চেষ্টার অভিযোগ উঠেছিলো বেশকিছুদিন আগেই। এই ঘটনার পর কয়েকদফা প্রতিবাদ ও মানববন্ধনেও এখন অবধি কোন শাস্তির মুখে পড়েননি ঐ শিক্ষিকা। এ দফায় তাই অভিযুক্ত শিক্ষিকাকে সঠিক ও দৃস্টান্তমুলক বিচারের আওতায় আনতেই জোর প্রতিবাদ ও বিক্ষোভে মাঠে নেমেছেন সচেতন অভিভাবকমহল শিক্ষার্থীরা।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা সালন্দর কামরুল হুদা চৌধুরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী গ্রন্থাগারিক/ ক্যাটালগার শিক্ষিকা শরিফা খাতুন এক ছাত্রীকে অসামাজিক কাজে লিপ্ত করায় তার অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা।

thakurgaon-somoyerkonthosor

রবিবার সকালে শিক্ষিকার অপসারণের জন্য স্কুলের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে স্কুলের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।

 

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গ্রন্থাগারিক শিক্ষিকা শরীফা সম্প্রতি স্কুলের এক ছাত্রীকে প্রলোভন দেখিয়ে রংপুর নিয়ে যায়। পরে একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে যায় ওই ছাত্রীকে। এসময় কাজের কথা বলে ওই শিক্ষিকা ছাত্রীকে রেখে বের হয়ে যায়। হঠাৎ হোটেলের ভেতরে দুইজন ঢুকে ছাত্রীর সঙ্গে অশ্লালীন কার্যকলাপের চেষ্টা করে। ছাত্রীর চিকিৎকারে এসময় আশেপাশের মানুষ ছুটে আসলে ওই দুইজন পালিয়ে যায়। পরে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে বাসায় নিয়ে আসা হয়।

পরিবারের পক্ষ থেকে স্কুলে গ্রন্থাগারিক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষক বরাবরে লিখিত অভিযোগ করা হয়। লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করে স্কুল কমিটি। তদন্ত কমিটির কাছে অপরাধ স্বীকার করে শিক্ষিকা ক্ষমা প্রার্থনা করেন। আর তাতেই চুপ হয়ে যান তদন্ত কমিটি।

See also  দেহ ব্যবসা চালানোর দায়ে পাঁচজনের দণ্ড

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ মতে, পরে ওই শিক্ষিকার অপসারণের দাবিতে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে লিখিত অভিযোগ করা হয়। কিন্তু বোর্ডের চেয়ারম্যান স্কুলে গত ২৪ শে আগস্ট এসে ওই শিক্ষিকার বিষয়ে সদয় হওয়ার জন্য সকলকে বলেন। এসময় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে স্কুলের সকল শিক্ষার্থীরা। ক্লাস বর্জন করে তারা বিক্ষোভ শুরু করে।

এরপরেরদিন বহাল তবিয়তেই অভিযুক্ত শিক্ষিকা স্কুলে আসলে শিক্ষার্থীরা তাকে দেখে পুনরায় উত্তেজিত হয়ে আবার ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ শুরু করে।

thakurgaon-somoyerkonthosor

পরে জেলা শিক্ষা অফিসার শাহিন আক্তার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরবর্তীতে জেলা শিক্ষা  বোর্ডের চেয়ারম্যান ঘটনাটি পুনরায় তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন। তার আশ্বাসের প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে গেলেও তাদের দাবি ওই লাইব্রেরিয়ান শিক্ষিকা স্কুলে আসলে তারা আবারো ক্লাস বর্জন করবে এবং দ্রুত ওই শিক্ষিকার অপসারণের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। কিন্তু প্রায় দুই মাস অতিবাহিত হলেও কোনো সমাধান না পাওয়ার কারণে শিক্ষার্থীরা আবার নতুন করে আন্দোলন শুরু করেছে এবার ।

এ প্রসঙ্গে জানতে জেলা শিক্ষা অফিসারের অফিসে বেশ কয়েকবার গিয়ে ও তার মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করেও কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সচেতন মহলের প্রত্যাশা খুব শিঘ্রই সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ এ প্রসঙ্গে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করবেন ।

ছাত্রীকে দিয়ে শিক্ষিকার দেহ ব্যবসার ফাঁদ! প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে উত্তরের শান্ত জনপদ ঠাকুরগাঁও