পুলিশ জানায়, আশিকের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় হত্যা, ছিনতাই, নারী ও শিশু নির্যাতন, অস্ত্র, মাদকসহ মোট ১৬টি মামলা রয়েছে। সবশেষ গত ৭ নভেম্বর একটি ছিনতাই মামলায় পুলিশ আশিককে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ওই নারীর স্বামী বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা করেন। আশিকুল ইসলামসহ এজাহারে চারজনের নাম উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া তিনজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। এজাহারভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন আশিকের দুই সহযোগী ইস্রাফিল খুদা ওরফে জয় ও মেহেদী হাসান ওরফে বাবু এবং রিসোর্টের ব্যবস্থাপক রিয়াজ উদ্দিন। এর মধ্যে রিয়াজ উদ্দিনকে গত বুধবার রাতে আটক করে র্যাব। ঘটনার পর থেকে মামলার অন্য আসামিরা আত্মগোপনে আছেন। সন্ত্রাসী আশিকের সঙ্গে রিয়াজের চেনাজানা ও বন্ধুত্ব রয়েছে।
আজ সকালে শহরের বাহারছড়ার বাড়িতে গিয়ে আশিককে পাওয়া যায়নি। আশিকের মা ও ছোট ভাই বাবুল বলেন, বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে আশিক বাসায় এসেছিলেন। কিছুক্ষণ পর একটি ফোন পেয়ে আবার বেরিয়ে যান। এর পর থেকে আজ দুপুর পর্যন্ত তিনি বাড়িতে ফেরেননি।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মুনীর উল গীয়াস জানান, আসামিদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
১৬ মামলার আসামি, মাদকসেবক ও মাদক ব্যবসায়ী একজন মানুষের (আশিকের) সঙ্গে বাইরের আরেকজন নারীর পরিচয় থাকা সন্দেহজনক। আমরা ঘটনার গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করছি।
পুলিশ জানায়, আশিকের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় হত্যা, ছিনতাই, নারী ও শিশু নির্যাতন, অস্ত্র, মাদকসহ মোট ১৬টি মামলা রয়েছে। সবশেষ গত ৭ নভেম্বর একটি ছিনতাই মামলায় পুলিশ আশিককে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়। ১৬ ডিসেম্বর কারাগার থেকে বেরিয়ে পর্যটক নারীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটায়।
ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ওই নারী ও তাঁর স্বামীকে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। তিনি বলেন, আড়াই মাসে ওই নারী বেশ কয়েকবার কক্সবাজারে এসেছেন। এর মধ্যে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় তিনি অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর স্বামীর টাকাপয়সা, মুঠোফোন চুরি হয়ে গেছে। দেড় থেকে দুই মাস আগে ওই নারী ৯৯৯ নম্বরে কল দিয়ে বলেছিলেন, তিনি (নারী) বিপদে পড়েছেন, আক্রমণের শিকার হতে পারেন, তাই তাঁর সাহায্য দরকার। কিন্তু স্থানীয় পুলিশ তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পায়নি। তখন তাঁদের চলে যেতে বলা হয়েছিল, কিন্তু তাঁরা চলে না গিয়ে এখানে অবস্থান করছেন। কেন অবস্থান করছেন, কারও সঙ্গে তাঁদের শত্রুতা আছে কি না, এসব সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে।
গত বুধবার ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর ৯৯৯ নম্বরে ওই নারী কল দিয়ে সাহায্য পাননি বলে অভিযোগ উঠেছে। এ প্রসঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, এ কথা সত্য নয়। ওই নারীর কল দেওয়ার কোনো প্রমাণ মেলেনি। কল দিলে অবশ্যই পুলিশের সাড়া মিলত।
আরেক প্রশ্নের জবাবে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ওই নারী দাবি করছেন, তিনি পর্যটক হিসেবে কক্সবাজারে ভ্রমণে এসেছেন। কিন্তু তাঁরা আসলে পর্যটক কি না, সেটা নিশ্চিত করে বলতে সময় লাগবে। তবে তাঁরা গত তিন মাসে একাধিকবার এখানে এসেছেন, সেটা নিশ্চিত।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার সকালে ঢাকা থেকে স্বামী ও আট মাসের সন্তানকে নিয়ে ওই নারী কক্সবাজারে বেড়াতে যান। বিকেলে স্বামী ও সন্তানের সঙ্গে ওই নারী সৈকতের লাবণী পয়েন্টে ঘুরতে যান। বালুচর দিয়ে হেঁটে পানির দিকে নামার সময় এক যুবকের সঙ্গে ওই নারীর স্বামীর ধাক্কা লাগে। এ নিয়ে কথা-কাটাকাটির জেরে সন্ধ্যায় ওই নারীকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এরপর একটি ঝুপড়ি চায়ের দোকানে নিয়ে তিনজন ওই নারীকে ধর্ষণ করে। তারপর একটি রিসোর্টে নিয়ে স্ত্রীকে আটকে রাখা হয়। পরে দুর্বৃত্তরা কক্ষের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে চলে যায়। এসব ঘটনা যেন কাউকে না জানানো হয়, তা নিয়ে ভয়ভীতিও দেখানো হয়।
পরে ওই নারী এক ব্যক্তির সহায়তায় দরজার লক খোলেন। তখন তিনি জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরে (৯৯৯) কল দেন। সেখান থেকে বলা হয় থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার জন্য। তারপর এক ব্যক্তির সহযোগিতায় তিনি কল দেন র্যাব-১৫-তে। পরে র্যাব ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাঁকে উদ্ধার করে।
search tags: ধর্ষণ,সংঘবদ্ধ ধর্ষণ,ধর্ষন,ধর্ষক,ধর্ষণ মামলা,গৃহবধূ ধর্ষণ,নববধূকে ধর্ষণ,পর্যটককে ধর্ষণ,কক্সবাজার ধর্ষণ,বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণ,ধর্ষণ করে হত্যা করেছে,মেয়েকে ধর্ষণ করলো বাবা,কক্সবাজারে গণধর্ষণ,কক্সবাজারে গৃহবধূ ধর্ষণ,সিলেটে মেয়েকে ধর্ষণ বাবার,স্বামীর সামনে স্ত্রীকে ধর্ষণ,সিলেটে মেয়েকে ধর্ষণ করলো বাবা,স্বামী সন্তানকে বেঁধে গৃহবধূ ধর্ষণ,ধর্ষণ মামলায় আপন জুয়েলার্সের সাফাতসহ ৫ আসামিই খালাস,ধর্ষণ_মামলা,পর্যবেক্ষণ,বেড়াতে_গিয়ে_ধর্ষণের_শিকার,পর্যটক,পর্যটন