মানিকগঞ্জে বাড়িতে দেহ ব্যবসা: ২ কলেজ শিক্ষার্থীসহ বাড়ির মালিক আটক

মানিকগঞ্জে বাড়িতে দেহ ব্যবসা: ২ কলেজ শিক্ষার্থীসহ বাড়ির মালিক আটক

মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার তরা গ্রামের সাহেব আলীর বিরুদ্ধে দেহ ব্যবসার অভিযোগ উঠেছে। বাসা ভাড়া দেয়ার অজুহাতে তার বাড়িতে চলে এই ব্যবসা।

অসামজিক কার্যকলাপে জড়িত থাকার অপরাধে রোববার পুলিশ ওই বাড়ি থেকে আটক করেছে কলেজপড়ুয়া এক ছাত্রী (২২) ও এক ছাত্রকে (২৩)। সেই সাথে আটক করা হয়েছে এ ব্যবসার মূল হোতা বাড়ির মালিক সাহেব আলীকেও।

জানা যায়, শনিবার ৫০০ টাকার রুমটি একদিনের জন্য ভাড়া করে তারা। রাত যাপন করার মুহূর্তে ভোরে স্থানীয় লোকজন তাদের হাতেনাতে ধরে ফেলে। পরে পুলিশকে খবর দেয়।

সাবেক সৌদি প্রবাসী সাহেব আলীর পরিবারের ব্যবহৃত দুই-তিনটি কক্ষ ছাড়া প্রায় সব কক্ষই ভাড়া দেয়া হয়েছে। তার ভাড়াটিয়া হলো উঠতি বয়সের তরুণ-তরুণীসহ বিভিন্ন বয়সের অচেনা নারী-পুরুষ। স্বামী-স্ত্রীর নাম করে সেখানে চলে দেহ ব্যবসা।

 

বাইরে থেকে আসা নারী-পুরুষ কেউ ঘন্টা চুক্তি আবার কেউ রাত চুক্তি বাসা ভাড়া নিয়ে অসামাজিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে কয়েক বছর ধরে। রোববার টিনশেডের কক্ষগুলোতে যৌনকাজে ব্যবহৃত সামগ্রী ও যৌন উত্তেজক ওষুধের কভারও ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা যায়।

কলেজপড়ুয়া ছাত্রটি জানালেন, ওই ছাত্রীটি তার কলেজ বান্ধবী। এ পর্যন্ত ৪-৫ দিন তাকে নিয়ে এই বাড়িতে রাত কাটিয়েছেন। বাড়িতে থাকার জন্য বাড়ির মালিককে টাকা দিতে হয়। টাকা দিলে কোনো সমস্যা হয় না, স্বামী-স্ত্রীর মতো থাকা যায়। তবে এই কর্মকাণ্ডে তিনি এবার অনুতপ্ত বলে জানান।

মানিকগঞ্জ শহরের একটি কলেজের শিক্ষার্থী ওই ছাত্রী জানালেন, ‘ও (ছাত্রটি) আমার কলেজপড়ুয়া বন্ধু, তার সাথে এখানে একসাথে ছিলাম। পরিবারের অগোচরে এর আগেও কয়েকবার এসেছি।’

প্রতিবেশী ফেলানী বেগম জানালেন, ওই বাড়িতে সব সময় অচেনা নারী-পুরুষের যাতায়াত দেখা যায়। এদের মধ্যে কম বয়সী তরুণ-তরুণীরাও আসে। বাড়িটি চারিদিক থেকে ঘেরাও করা। অসামাজিক কর্মকাণ্ড এ বাড়ি অনেক দিন ধরেই চলছে।

এলাকার যুবক লিটন জানান, প্রায় দুই বছর ধরে এই বাড়িতে অসামাজিক কর্মকান্ড চলছে। অনেকবার হাতেনাতে ধরা হলেও বিভিন্নভাবে রক্ষা পেয়ে যায়। বাড়ির মালিক, তার স্ত্রী ও মেয়ে-মেয়ের জামাই সরাসরি এই ব্যবসার সাথে জড়িত। প্রতি ঘন্টা এবং রাত হিসেবে ঘর ভাড়া নিয়ে এখানে অসামাজিক কর্মকাণ্ড চলছে।

বাড়ির মালিক সাহেব আলী জানান, অনেক দিন বিদেশে ছিলাম। সেখানে থাকাকালিন একটি বিল্ডিং করেছি। বাড়ির ৮-১০টি কক্ষ ভাড়া দেয়া হয়েছে। আগে জানতাম না অনেকে ভাড়া নিয়ে অসামাজিক কর্মকাণ্ড চালায়। যারা ধরা পড়েছে তাদের নাম-ঠিকানা জানি না। তবে এক মাসের জন্য ২৪০০ টাকায় একটি কক্ষ ভাড়া নিয়েছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য রাজা মিয়া জানান, ওই বাড়িতে অসাজিক কার্যকলাপ হয় লোকমুখে শুনেছি। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন এলাকার নারী-পুরুষের আনা গোনার কথা এলাকার লোকজন আমাকে বললো। কিন্ত বুঝতে পারিনি। আজ যখন প্রকাশ পেলে তখন পুরোপুরি বুঝতে পেরেছি। এদের শাস্তি হওয়া উচিত বলে একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমি মনে করি।

ঘিওর থানার এস আই আমিনুর ইসলাম বলেন, রোববার সকালে গোপন সংবাদ পেয়ে ফোর্স নিয়ে সাহেব আলীর বাড়িতে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি কলেজ পড়–য়া এক ছাত্র ও ছাত্রী এক কক্ষে অবস্থান করছে। তারা সেখানে রাত্রি যাপনও করেছে।

তবে বাড়িটি সম্পর্কে প্রতিবেশীদের ভালো ধারণা নেই। অসামাজিক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকায় বাড়ির মালিক সাহেব আলীসহ ওই দুইজনকে আটক করা হয়েছে। অসামাজিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা এবং জড়িত থাকায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সূত্র: নয়া দিগন্ত

 

আমাদের ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করুন

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*