মুন্সিগঞ্জে মালির পাথর এলাকায় মাদক ব্যবসার অন্তরালে চলছে নারীদের দেহ ব্যবসায়

মুন্সিগঞ্জে মালির পাথর এলাকায় মাদক ব্যবসার অন্তরালে চলছে নারীদের দেহ ব্যবসায়

মুন্সিগঞ্জে সদর উপজেলার মালির পাথর এলাকায় মাদক ব্যবসার আড়ালে রমরমা দেহ- ব্যবসা চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইতি মধ্যে গ্রামটি মাদক ও দেহ ব্যবসার অঞ্চল হিসাবে পরিচিতি ব্যাপক অর্জন করেছে।
গ্রামটিতে মাদক ব্যবসায়ী ইয়াবা শাহীন দীর্ঘদিন ধরে সুন্দরী মেয়েদের বিয়ের প্রলোভন ও অর্থের লোভ দেখিয়ে মাদক ও যৌন ব্যবসায় কাজে লাগিয়ে কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। শাহীনের মাদক ব্যবসা ও যৌন ব্যবসা চলে কারেন্টজাল কারখানার ভিতরে আর স্ত্রীদের বাসায় অনেকটা গোপনীয়তা রক্ষা করে।
তার ভয়ে এলাকায় কোন সুন্দরী মেয়ে রাস্তায় বের হতে পারেনা। তার অপকর্মের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে এলাকা ছাড়া হতে হয়।এমনটাই অভিযোগ মালির পাথর এলাকাবাসীর।
স্থানীয় গ্রামবাসী সূত্রে জানা যায়, মালির পাথর গ্রামের বড় বাড়ির নুর হোসেনের ছেলে শাহীন দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় অবৈধ কারেন্টজাল উৎপাদন, বিভিন্ন বয়সের মেয়েদের দিয়ে মাদক বিক্রি, দেহ ব্যবসা এবং বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মেয়েদেরকে দিয়ে পতিতাবৃত্তি করানো সহ নানা অপকর্মের সাথে জড়িত আছে ইয়াবা শাহীন ও তার স্ত্রী কলি আক্তার ।
তাছাড়া বাহিরের মেয়েদের এনে তাদের দিয়ে তার এলাকায় মাদক ও রমরমা দেহ ব্যবসা চালাচ্ছে। তার অবৈধ স্ত্রী আকলিমা আক্তারও শাহীনের বাড়ীর পাশে থাকেন। শাহীন তার অবৈধ স্ত্রী আকলিমাকেই বেশী সময় দেয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শাহীন এর সহযোগী পন্ডিত মিয়া মাদকবেসী এবং যৌনকর্মের খদ্দের পেলে শাহীনের স্ত্রী কলি আক্তারের কাছে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ গ্রামবাসীর। শাহীনের অবৈধ স্ত্রী আকলিমার ঘরে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। আকলিমা এখন শাহীনের পতিতা স্ত্রী হিসাবে শাহীনের সাথে সংসার করে চলছে। তাছাড়া এলাকার যুবতী মেয়েদের কেউ শাহীনের নজরে পড়লে তার রেহাই নেই ।
মেঘলা আক্তার নামের ৯ম শ্রেণির এক ছাত্রী শাহীনের ভয়ে ঢাকায় চলে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শাহীনের লালসার শিকার কোন নারীকে শাহীন বিবাহ করেনা। বিবাহের প্রলোভন দেখিয়ে দেহ ভোগ পরবর্তীতে নামিয়ে দেন দেহ ব্যবসায়। শাহীনের অবৈধ স্ত্রী আকলিমা জানান, শাহীন আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আজও সম্পর্ক টিকিয়ে রেখেছে। আমার সাথে শাহীনের সম্পর্কের ৪ বছরের মাথায় কলি শাহীনকে তার পাতানো ফাঁদে ফেলে জোর করে বিবাহ করে। শাহীন আমার ঘরে আসে আর আমাকে সময়ও দেয়, সংসার চালায় কিন্তু স্ত্রী হিসাবে বৈধতা দেয়নি।
তিনি আরো বলেন, শাহীনের সাথে সংসার জীবনে আসমিতা নামের ৭ বছরে একটি কণ্যা সন্তান রয়েছে। আমি তাকে নিয়েই বাড়ীতে থাকি। আমার স্বামী মাদক বিক্রি করে সে বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে আমি খোঁজ নিয়ে জেনেছি এলাকায় কলি বেগমকে কেউ ভাল চোখে দেখেনা।
সরেজমিনে মাঠপাড়া এলাকায় গিয়ে জানাযায়,কলি থাকেন মুন্সিগঞ্জ শহরের মাঠপাড়া এলাকায় তার বাবার বাড়ী আবাসিক ফ্ল্যাটে। সেখানে চলে তার দেহ ব্যবসা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে মাঠ পাড়া এলাকার ভাড়াটিয়া বলেন, কলির বাসায় সারাদিন নানা বয়সের লোকজন আসা যাওয়া করেন আর আসলেও ১০-২০ মিনিটের বেশী তারা অবস্থান করেনা।
সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে তার বাসায় লোকজনের আসা যাওয়া। বেশ কয়েকদিন ধরে সরকারী এক কর্মকর্তাও তার বাসায় আসা যাওয়া করছে।
মালির পাথর এলাকার যুবক হাসান বলেন,কলি তার ঘরে পন্ডিত নামের যুবককে তার সহযোগী হিসাবে নিজের পাশে রাখেন। এই পন্ডিত এর মাধ্যমে কলি বড় বড় খদ্দর পেয়ে থাকেন। আর বিনিময়ে কলির কাছ থেকে কমিশন নেয় পাশাপাশি কলির সাথে মেলামেশাও করে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তাছাড়া কলির সাথে বড় বড় রাজনৈতিক দলের নেতাদের নাকি হাতও রয়েছে।
পন্ডিতের বাবা আজিজ মাদবর জানান, আমার ছেলে বিবাহ করে তার শ্বশুড়বাড়ী থাকে। শাহীন একজন মাদক ও দেহ ব্যবসায়ী আর আমার ছেলে হয়েছে তার সহযোগী এ কারনে আমার ছেলেকে আমি বাড়ী থেকে বের করে দিয়েছি। কলির সাথে পন্ডিতের সম্পর্কের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়টি বলতেও আমার ঘৃনা হয়।ও অপরাধী আর কোন অপরাধী আমার সন্তান হতে পারেনা।
কলির সহযোগী পন্ডিত জানান, আমি কলির বাসায় সব সময় যাওয়া আসা করি কারন কলি আমার বন্ধু। আপনি তো কলিকে মাদক ও দেহ ব্যবসা করিতে সহযোগিতা করেন? এমন প্রশ্নের জবাব না দিয়ে তিনি বলেন, কলি আর আমি কি করি সেটা জেনে আপনাদের লাভ নেই । আর করলে আপনাদের সমস্যা কি?
এ বিষয়ে কলির কাছে জানতে চাইলে তিনি এর কোন সৎউত্তর দিতে পারেনি।
মুন্সিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইউনুচ আলী বলেন, মাদকের সাথে কোন আপোষ নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, মাদকের সাথে জড়িত বা যে কোন অপরাধের সাথে জড়িত ব্যক্তির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

See also  গোপালগঞ্জে দেহ ব্যবসার অভিযোগে ৪ যুবতী গ্রেপ্তার

Source:: http://www.munshiganjnews.com/