বরগুনা জেলা পরিচিতি, নামকরন ও দর্শনীয় স্থানসমূহ

বরগুনা জেলা পরিচিতি, নামকরন ও দর্শনীয় স্থানসমূহ

বরগুনা জেলা

বরগুনা জেলা (বরিশাল বিভাগ)  আয়তন: ১৮৩১.৩১ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২১°৪৮´ থেকে ২২°২৯´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৫২´ থেকে ৯০°২২´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ঝালকাঠি, বরিশাল, পিরোজপুর ও পটুয়াখালী জেলা, দক্ষিণে পটুয়াখালী জেলা ও বঙ্গোপসাগর, পূর্বে পটুয়াখালী জেলা, পশ্চিমে পিরোজপুর ও বাগেরহাট জেলা।

জনসংখ্যা ৮৪৮৫৫৪; পুরুষ ৪৩০৪২২, মহিলা ৪১৮২৩২। মুসলিম ৭৭৭৩৭০, হিন্দু ৬৯৪৪৬, বৌদ্ধ ৩০২, খ্রিস্টান ১৩০৪ এবং অন্যান্য ১৩২।

জলাশয় বিশখালী, বলেশ্বরী, বুড়ীশ্বর, আন্ধারমানিক ও গজালিয়া উল্লেখযোগ্য নদী। বরগুনা থানা গঠিত হয় অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষদিকে এবং মহকুমায় উন্নীত হয় ১৯৬৯ সালে। মহকুমাকে জেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে।

ইতিহাস

১৯৬৯ সালে বরগুনা পটুয়াখালী জেলার অধীনে একটি মহকুমা হয় ।১৫ ফাল্গুন ১৩৮৯ বঙ্গাব্দে (১৯৮৪ সাল) দেশের প্রায় সকল মহকুমাকে জেলায় উন্নীত করা হলে বরগুনা জেলায় পরিণত হয়।

বরগুনা নামের ইতিহাসের সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য না পাওয়া গেলেও জানা যায় যে, উত্তরাঞ্চলের কাঠ ব্যবসায়ীরা এতদ্ঞ্চলে কাঠ নিতে এসে খরস্রোতা খাকদোন নদী অতিক্রম করতে গিয়ে অনুকূল প্রবাহ বা বড় গোনের জন্য এখানে অপেক্ষা করত বলে এ স্থানের নাম বড় গোনা। কারো মতে আবার স্রোতের বিপরীতে গুন(দড়ি) টেনে নৌকা অতিক্রম করতে হতো বলে এ স্থানের নাম বরগুনা । কেউ কেউ বলেন , বরগুনা নামক কোন প্রতাপশালী রাখাইন অধিবাসীর নামানুসারে বরগুনা । আবার কারো মতে বরগুনা নামক কোন এক বাওয়ালীর নামানুসারে এ স্থানের নামকরণ করা হয় বরগুনা ।

কিভাবে যাবেন?

রাজধানী ঢাকা থেকে বরগুনা সদরের দূরত্ব ২৪৭ কিলোমিটার আর বিভাগীয় শহর বরিশাল থেকে ৯০ কিলোমিটার। এই জেলাটি একটি উপকূলী ও নদীবহুল অঞ্চল হওয়ায় এখানকার যেকোনো স্থানে আসার জন্য নৌপথ সবচেয়ে সুবিধাজনক পরিবহন ব্যবস্থা। তবে, সড়ক পথেও এখানে আসা সম্ভব; সেক্ষেত্রে ফেরী পারাপার হতে হবে। বরগুনায় রেল যোগাযোগ বা বিমান বন্দর নেই বলে এই দুটি মাধ্যমে এখানকার কোনো স্থানে আসা যায় না।

  • ঢাকা থেকে প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে ৯টা এবং রাত ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত গাবতলী ও সায়েদাবাদ থেকে সাকুরা, সুগন্ধা, মিয়া, আব্দুল্লাহ্, পটুয়াখালী এক্সপ্রেস প্রভৃতি কোম্পানীর বাস ছাড়ে বরগুনার উদ্দেশ্যে। এছাড়া গাড়ি ভাড়া করে নিয়ে আসা যায়।
    • ঢাকা থেকে বরগুনা আসার ভাড়া : ননএসি বাসে ২২০/- হতে ৬৫০/-।
  • চট্টগ্রাম থেকে সৌদিয়ার বাস আসে বরগুনায়; ভাড়া পড়ে ৬৫০/-।
  • বরগুনা সদর থেকে সড়ক পথে পায়রা, লেবুখালী ও কির্তনখোলা নদী ফেরী পারাপারের মাধ্যমে পটুয়াখালী হয়ে বরিশাল বিভাগীয় শহরে পৌছান যায়। এ পথের মোট দূরত্ব প্রায় ৯০ কিঃমিঃ এবং সময় লাগে প্রায় ০৪ ঘণ্টা। বর্তমানে এ পথের বিকল্প হিসেবে বরিশাল বিভাগীয় শহরে যাতায়াতের জন্য বরগুনা-বেতাগী-মির্জাগজ্ঞ-বাকেরগজ্ঞ-দপদপিয়া সড়কটি ব্যবহৃত হচ্ছে। এ পথে অপেক্ষাকৃত কম সময় লাগলেও সড়কটিতে সংস্কার কাজ চলমান থাকায় এ পথটি কম ব্যবহৃত হয়।
  • বরগুনা হতে সড়ক পথে কাকাচিড়া-শতকর-মঠবাড়িযা-ভান্ডারিয়া-পিরোজপুর হয়ে বাগেরহাট ও খুলনা বিভাগীয় শহরে যাতায়াতের ব্যবস্থা রয়েছে।
  • বরগুনা জেলা হতে বরিশাল এবং খুলনা বিভাগীয় শহরে পৌঁছে দেশের যেকোন স্থানে যাওয়া সম্ভব।
  • বরগুনা সদর থেকে পায়রা নদী ফেরী পারাপারের মাধ্যমে আমতলী উপজেলায় পৌছান যায়, এতে প্রায় ১ ঘণ্টা সময় লাগে। আমতলী উপজেলা হতে সরাসরি সড়কপথে তালতলী উপজেলায় পৌঁছান যায় যাতে সময় লাগে প্রায় ১ ঘণ্টা। এছাড়া বেতাগী উপজেলার সাথে বরগুনা সদর উপজেলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ রয়েছে, এতে প্রায় ১ ঘণ্টা সময় লাগে। বরগুনা জেলা সদর থেকে বড়ইতলা-বাইনচটকী ফেরী পারাপারের মাধ্যমে পাথরঘাটা ও বামনা উপজেলায় সড়ক যোগাযোগ বিদ্যমান এতে সময় লাগে যথাক্রমে ১.৩০ ঘণ্টা এবং ২ ঘণ্টা।

নৌপথে

প্রতিদিন একাধিক লঞ্চ ঢাকা সদরঘাট হতে বরগুনা যায়। লঞ্চ ছাড়ে ৪.৩০টা হতে ৮.০০টার মধ্যে। লঞ্চ ভাড়া ২০০ টাকা করে (ডেক), আর কেবিনে গেলে ৯০০ টাকা সিঙ্গেল, ১৮০০ টাকা ডাবল।

See also  ময়মনসিংহের পুরনো ঠাকুর বাড়িতে হয় দেহ ব্যবসা!

দর্শনীয় স্থানসমূহ

  • ফাতরার চর
  • আশার চর
  • হরিণঘাটা বনাঞ্চল ও লালদিয়ার চর ও সমুদ্র সৈকত
  • রাখাইন পল্লী তালতলী
  • বিবিচিনি শাহী মসজিদ
  • সোনাকাটা ফরেস্ট
  • ছোনবুনিয়া
  • মাঝেরচর
  • লালদিয়া সমুদ্রসৈকত

খাওয়া – দাওয়া

বরগুনায় খাবারের জন্য বেশ কিছু স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেখানে সবধরণের সুস্বাদু খাবার পাওয়া যায়। এগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ

  • রহমান রেস্তোরা – সদর।

থাকা ও রাত্রী যাপনের স্থান

বরগুনায় থাকার জন্য স্থানীয় পর্যায়ের কিছু সাধারণ মানের হোটেল রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে সরকারি ব্যবস্থাপনায় থাকার জন্যে উন্নতমানের –

  1. জেলা পরিষদ ডাকবাংলো – বরগুনা।
  2. হোটেল তাজবিন – সদর।
  3. হোটেল বে অব বেঙ্গল – সদর রোড, বরগুনা; মোবাইল: ০১৭১২-২৩৪ ৩৩২।

জরুরি নম্বরসমূহ

  • ওসি, আমতলীঃ মোবাইল: ০১৭১৩-৩৭৪ ৩৫৪;
  • ওসি, তালতলীঃ মোবাইল: ০১৭১৩-৩৭৪ ৩৫৮;
  • ওসি, পাথরঘাটাঃ মোবাইল: ০১৭১৩-৩৭৪ ৩৫৫;
  • ওসি, বরগুনাঃ মোবাইল: ০১৭১৩-৩৭৪ ৩৫৩;
  • ওসি, বামনাঃ মোবাইল: ০১৭১৩-৩৭৪ ৩৫৭;
  • ওসি, বেতাগীঃ মোবাইল: ০১৭১৩-৩৭৪ ৩৫৬